প্রত্যয় ডেস্ক: ৬০ বছরের অধিক বয়সীরা বেশি করোনা সংক্রমণের ঝুঁকির মধ্যে থাকলেও অন্যরাও একেবারে শঙ্কামুক্ত নয়। কিন্তু এবার ফ্রান্সে যা ঘটল, তাতে বেশ অবাক চিকিৎসক মহলও। কারণ এবার মায়ের গর্ভাশয়ে থেকেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছে এক শিশু। ফ্রান্সের চিকিৎসকরা এটাকে কভিড -১৯-এর প্রথম প্রমাণিত কেস হিসাবে গর্ভবতী মায়ের থেকে তার গর্ভের সন্তানের আক্রান্ত হওয়ার প্রথম প্রমাণিত ঘটনা বলে জানিয়েছেন।
নবজাতক জন্মের কিছুদিনের মধ্যেই তার মস্তিস্কে প্রদাহ সৃষ্টি হয়। ভাইরাস গর্ভাশয় পেরিয়ে জন্মের আগে শিশুকে সংক্রমিত করার ঘটনায় বেশ আশ্চর্য হয়েছেন চিকিৎসকরা।
নেচার কমিউনিকেশনসে প্রকাশিত কেস স্টাডিতে কভিড -১৯ এ আক্রান্ত এমন অনেক শিশুর জন্মের কথা বলা হয়েছে, যাদের জন্মের পূর্বেই করোনায় সংক্রমিত হওয়ার সন্দেহ করেছিলেন চিকিৎসকরা। তবে এখন পর্যন্ত, প্রসবের আগে করোনায় সংক্রমিত হওয়ার প্রমাণিত ঘটনা এটাই প্রথম।
প্যারিসের এন্টোইন বাক্লিয়ার হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ এবং নবজাতকের যত্নের চিকিৎসা বিভাগের পরিচালক ড্যানিয়েল দে লুকা বলেছেন, ‘দুর্ভাগ্যক্রমে এই ক্ষেত্রে সংক্রমণ সম্পর্কে কোনো সন্দেহ নেই। ডাক্তার ও নার্সদের অবশ্যই সচেতন হতে হবে যে এটি হতে পারে। এটি অবশ্যই নিশ্চিত এবং এমনটা ঘটতে পারে।’
গত মাসে ওই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন নাংলোইয়ের বাসিন্দা বছর পঁচিশের অন্তঃসত্ত্বা তরুণী। গত ১১ জুন জানা যায়, তিনি করোনায় আক্রান্ত। সংক্রমণ ছড়ায় তার স্বামীর শরীরেও। ২৫ জুন ওই নারীর দ্বিতীয়বারের রিপোর্টও পজিটিভ আসে। তবে গত ৭ জুলাই টেস্টের পর বোঝা যায়, তিনি করোনামুক্ত। ঠিক তার পরের দিনের সন্তানের জন্ম দেন ওই নারী। কিন্তু জন্মের ছয় ঘণ্টা পরই জানা যায়, শিশুর শরীরে থাবা বসিয়েছে মারণ ভাইরাস।
হাসপাতালের চিকিৎসকদের মতে, গর্ভাবস্থায়ও মায়ের শরীর থেকে শিশুর মধ্যে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। প্রসবের সময় করোনামুক্তই হয়ে উঠেছিলেন ওই নারী। শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার ঘণ্টা ছয়েক পর দুজনেরই নমুনা টেস্ট করা হয়। তখনই সদ্যোজাতের কভিড-১৯ রিপোর্ট পজিটিভ আসে। আপাতত চিকিৎসা চলছে তার।
এর আগে চীনের গবেষণা থেকে জানা গিয়েছিল, গর্ভাবস্থায় আম্বিলিক্যাল কর্ডের মাধ্যমে সন্তানের শরীরে কভিড-১৯ সংক্রমিত হতে পারে। যা থেকে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকা অস্বাভাবিক নয়। যদিও এ বিষয়ে এতোদিন কোনো প্রমাণ মেলেনি।